চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকা কয়েক দিনের মধ্যেই জরুরি প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুমোদন দেবে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির জরুরি সভা হয়েছে। যেখানে রাশিয়া চীনসহ আর দুই-তিনটি টিকা অনুমোদন দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে এই টিকা অনুমোদন দেয়া হবে।
এরপর কবে এবং কত লাখ টিকা দেশে আসবে তা ঠিক করা হবে। তবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চীন থেকে অন্তত উপহারের ৫ লাখ টিকা আসবে বলে আশা করছে অধিদপ্তর।
সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকা রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়ার পর চলমান টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে সংশয় দেখা দেয়, এমন সময়ই অন্য দেশ থেকে টিকা কেনার অগ্রগতির খবর আসছে। ইতিমধ্যে রাশিয়ার টিকা জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দিলেও, এখান পর্যন্ত সিনোফার্ম জাতিসংঘের এই সংস্থাটি থেকে তাদের টিকার অনুমোদন পায়নি। তবে চীনের দুটি টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চীনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন না দিলেও, বাংলাদেশ এই টিকা জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দেবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. খুরশীদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, অনেক ‘দেশের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও অনুমোদন দেয়নি। তাই বলে কি তারা টিকা প্রয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে? তবে টিকা মানবদেহে প্রয়োগের আগে করোনা গঠিত জাতীয় কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে, অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা টিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার, মডার্না, জনসন অ্যান্ড জনসন, রাশিয়ার স্পুনিক ভি, চীনের সাইনোফার্ম (বেইজিং) ও সাইনোভেক।
রাশিয়ার টিকা জরুরি অনুমোদন নিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, এখন রাশিয়ার টিকা জরুরি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাইপলাইনে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মসহ কয়েকটি টিকা অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে।
‘তাদের টিকার সমস্ত ডাটা আমরা পেয়েছি। সরকারিভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমাদের কাছে এটি এসেছে। আমরা ডাটাগুলো দেখেছি। আমার এখানে যারা বিশেষজ্ঞ রয়েছে, তারা এটি বাচাইবাছাই করছেন।
‘আমাদের ১২ সদস্যের পাবলিক হেলথ কমিটি রয়েছে। আজকে তাদের একটি মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে এ বিষয়ে সবকিছু দেখে সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সুপারিশ দেখে রাশিয়ার টিকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য টিকাগুলোর অনুমোদনা দেয়া হবে।’
টিকার অনুমোদন দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা রাশিয়া ও চীনের টিকা ছাড়া আরও যে সংস্থা অনুমোদনের আবেদন করেছে, তাদের বিষয়েও সরকার সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে। রাশিয়ারটি এরই মধ্যে অনুমোদনের সুপরিশ করেছে। বাকিগুলোও ধীরে ধীরে হয়ে যাবে।’
সরকারের একটি চিঠি থেকে জানা গেছে, গত ১৫ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে চীন সরকারকে টিকার জন্য অনুরোধ জানাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চীন সরকার টিকা দিতে ২০ এপ্রিলে চিঠি দেয়।